বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন
আবু ফাইয়াজ : জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি সাবেক এমপি মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি উগ্রবাদী ও কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী। তিনি কাশ্মীরসহ ভারতে মুসলমানদের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছেন। গো হত্যার মিথ্যা অভিযোগ তোলে বিভিন্ন সময়ে মুসলমানদের উপর যেই অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে তা ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা।
তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির মাধ্যমে কাশ্মীরের বিশেষ স্বতন্ত্র ও মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে মোদি সরকার। ইন্টারনেট, টেলিফোন সংযোগ বন্ধ এবং সাংবাদিকদেরকে বের করে দিয়ে পুরো কাশ্মীরকে বিশ্ব থেকে আলাদা করে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ন্যক্কারজনক তান্ডব চালাচ্ছে। যখন তখন যাকে তাকে হত্যা, গ্রেফতার ও নির্যাতন করে কাশ্মীরকে জলন্ত একটি অগ্নেয়গিরিতে রূপান্তরিত করেছে। তিনি মোদিকে বিশ্বসন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে বলেন অবিলম্বে কাশ্মীরি ইস্যুতে জাতিসংঘে হস্থক্ষেপ কামনা করেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে কাশ্মীরে ভারতীয় অাগ্রাসন ও মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী পথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী উপরুক্ত কথাগুলো বলেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ২টায় শহরের পুরাতন বাসটেন্ডে সুনামগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল এসে একত্রিত হয়। এক পর্যায়ে পুরো বাসস্টেন্ড লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠলে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অতিক্রম করে ট্রাফিক পয়েন্টে গিয়ে এক পথসভায় মিলিত হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সম্পাদক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় পথসভায় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা শায়খ আব্দুল বছির, জেলা জমিয়তের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ আকবর আলী, মাওলানা শায়খ আনোয়ার হোসাইন, মাওলানা শায়খ সাজিদুর রহমান। জেলা সহসভাপতি মাওলানা শায়খ আফসার উদ্দীন, মাওলানা নাজিম উদ্দীন, মাওলানা আবুল ফজল, মাওলানা শামসুদ্দীন, মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব, মাওলানা মুশতাক আহমদ, মুফতি আব্দুল মালিক, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা রুকন উদ্দীন, সহসাধারণ সম্পাদক মাওলানা রফিক আহমদ উলাশনগরী, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা ইলিয়াস আহমদ, মাওলানা আবু সাইদ, জেলা যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই, সেক্রেটারি মাওলানা সাইদুর রহমান, জেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি মাওলানা হাফিজ তাহা হোসাইন, সেক্রেটারি ছাত্রনেতা উবায়দুল হক চৌধুরী।
বিক্ষোভ মিছিলে সুনামগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলা জেলা জমিয়ত, যুবজমিয়ত ও ছাত্র জমিয়তের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করে। বাস, মিনিবাস, লেগুনা, ফোরষ্টুক ও নৌকা রিজার্ভ করে মিছিলকারীরা পুরাতন বাসটেন্ড একত্রিত হয়ে। এসময় পুরো সুনামগঞ্জ শহর মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল বছির বলেন, ভারত উপমহাদেশে হাজার বছরের গোলামীতে অভ্যস্থ হিন্দুদের হীনমন্যতা আজও দূর হয়নি। কাশ্মীরকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে ভারত কেবল জবরদখল করে রাখেনি, বরং কাশ্মীরকে গিলে খাওয়ার পাঁয়তারা করছে। ভারতের এই অন্যায় বাসনা পূরণের জন্য কাশ্মীরি জনগণের উপর ভয়াবহ অত্যাচার খুন-গুম, অপহরণ এমনকি তাদের ফসলাদি কেটে আর্থিক নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও পরিবেশ বিনষ্টের মহা উৎসব। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত। একদল জালিম অন্যদল মজলুম। আমি মজলুমের পক্ষে আছি। বাংলাদেশের জনগণ জালিম ভারতের পক্ষে নয় মজলুম কাশ্মীরের পক্ষে।
শহরের তেঘরিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আনোয়ার হোসাইন বলেন সীমান্ত রেখার প্রতিবন্ধকতা না থাকলে বর্তমানে কাশ্মীরিদের পাশে স্বশরীরে দাঁড়ানো সময়ের সবচেয়ে বড় দাবী। জালিমদেরকে ইতিহাস কখনো ক্ষমা করে না। মুদি সরকারকেও ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কাশ্মীরিদের উপর নির্যাতন বন্ধ করুন এবং তাদের স্বায়ত্ত্বশাসন ফিরিয়ে দিন। অন্যথায় ভারত ভেঙ্গে খন্ড বিখন্ড হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কেন্দ্রীয় জমিয়তের সদস্য ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কাশ্মীর সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয় নয়। এটা কাশ্মীরের উপর ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ ছাড়া অন্য কিছু নয়। কাশ্মীর কখনো ভারতের অংশ ছিল না। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেশের জনগণের মতামতের বিপরীতে না গিয়ে কাশ্মীরি জনগণের পাশে দাঁড়ান। তাদের স্বায়ত্বশাসন ফিরিয়ে দেবার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে জনগণের সরকার হিসেবে ভূমিকা পালন করুন।